বিবৃতি
“সিএইচটি জুম্ম ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি”র উদ্যোগে গুইমারা উপজেলায়
শিক্ষা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে
“আজ
যে শেখে, কাল সে নেতৃত্ব দেয়, শিক্ষাই তোমার জয়ের সোপান!”- এ্ই স্লোগানকে সামনে রেখে
২৫-২৭ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলার হ্যাপি বিদ্যানিকেতনে
শিক্ষা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্যাম্পেইনটি পরিচালিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “সিএইচটি জুম্ম ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি”র উদ্যোগে।
সিএইচটি জুম্ম ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি পরিচালিত তিনদিন ব্যাপী শিক্ষা ক্যাম্পেইনের তৃতীয় দিনে (২৭-০৩-২০২৫) সমাপনী অনুষ্ঠানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুভাষ চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে হ্যাপি বিদ্যানিকেতন অনাথ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা জ্যোতি সারা স্থবির, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী রুপান্তর চাকমা, জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মজুল ত্রিপুরা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুপায়ন চাকমা, বর্ষা চাকমা, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ক্লিন্টন চাকমা, খাগড়াছড়ি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সুরভী চাকমা, কেমিনা চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
অনুষ্ঠানটি
সঞ্চালনা করেন লিমন চাকমা।
অনুষ্ঠানে
বক্তারা বলেন, “শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার এবং সমাজের উন্নতির অন্যতম প্রধান উপাদান।
সমাজের পিছিয়ে রাখা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা শুধু ব্যক্তিগত উন্নতির পথই নয়, বরং
দারিদ্র্য দূরীকরণের কার্যকরী মাধ্যম। শিক্ষা একটি শিশুকে সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে
তোলে, যা তাকে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করে। দরিদ্র জনগোষ্ঠী শিক্ষার সুযোগ থেকে
বঞ্চিত হলে তারা দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্রে আবদ্ধ থেকে যায়। সঠিক শিক্ষা পেলে তারা দক্ষতা
অর্জন করতে পারে, যা কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ায় এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে।
শিক্ষিত ব্যক্তি স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও সামাজিক সচেতনতার বিষয়ে বেশি অবগত থাকে,
ফলে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করে সমাজ এগিয়ে নিতে অগ্রণী
ভূমিকা পালন করে।”
বক্তারা
আরো বলেন, পার্বত্য জেলাগুলোতে শিক্ষা ক্ষেত্রে এখনও নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। পর্যাপ্ত
অবকাঠামোর অভাব, দক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষা সামগ্রীর অপ্রতুলতা, অভিভাবক পর্যায়ে সচেতনতার
ঘাটতির ফলে অনেক শিক্ষার্থী অকালে ঝড়ে যাচ্ছে। এসব ঝড়ে পড়াদের ক্লাশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার
জন্য আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা
মাতৃভাষায় প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। উপজেলা শহরগুলোতে পর্যাপ্ত ছাত্রাবাস নির্মাণ
ও বিদ্যমান ছাত্রাবাসগুলোতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।”
আলোচনা
সভা শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে নানা শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেন সিএইচটি জুম্ম ব্লাড ডোনার্স
সোসাইটিরে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক রুনেল চাকমা।
২৫,২৬
ও ২৭ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে পাঠদান, নাচ-গান ও কৌতুকের মতো কর্মসূচি
পালন করা হয়। যাতে আশ্রম ও গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থী আনন্দের সাথে অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের
নানা বিষয়ে কৌতুহল ও প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন স্বেচ্ছাসেবকগণ। ২৭ মার্চ কর্মসূচির
শেষ দিনে এক হুদয়বিদারক ও একি সাথে উৎসাহব্যঞ্জক দৃশ্যের সম্মুখীন হন সিএইচটি জুম্ম
ব্লাড ডোনার্স সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকগণ। স্বেচ্ছাসেবকগণ নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে ফেরার
প্রাক্কালে শিক্ষার্থীরা ভালোবাসা ও হৃদয়ের টানে আবেগতাড়িত হয়ে কান্না জুড়ে দেয়। যা
স্বেচ্ছাসেবকসহ উপস্থিত অভিভাবকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। স্বল্প সময়ের এ ক্যাম্পেইনে শিক্ষার্থীরা
যেভাবে আপন করে নিয়েছে ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মসূচি গ্রহণে প্রেরণা হয়ে থাকবে।
উল্লেখ্য, সিএইচটি জুম্ম ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি পার্বত্য
চট্টগ্রামের একটি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যেটি ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত
হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে এ সংগঠনটি কার্যক্রম চালিয়ে
যাচ্ছে। বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত পাঁচ শতাধিক তরুণ শিক্ষার্থী
এ সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে সমাজের নানা ক্ষেত্রে নিজেদের ভূমিকা রাখছে।
বার্তা প্রেরক
রুপান্তর চাকমা
সদস্য, সিএইচটি জুম্ম
ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটি।






.jpg)
No comments:
Post a Comment